সৈয়দ আখতারুজ্জামান
‘কলকাতায়’ আমি যেমন হঠাৎ করে আকাশ থেকে পড়িনি, তেমনি মাটি ফুঁড়েও বেরোইনি। তাহলে? ভাসতে ভাসতে গিয়ে ঠেকে ছিলাম কলকাতা বন্দরে হুগলি নদীর চড়ায়। আগেই বলেছি, সাহিত্যের ব্যাপারটা বিশেষ করে বাংলা সাহিত্য ছিল কলকাতাকেন্দ্রিক। আমরা নির্বিবাদী পড়–য়ারা ধ্রুব জ্ঞান করতাম কলকাতাকে। কলকাতার মতো মজা। ক্রমে মজে গেলাম কলকাতার প্রেমে। সে কিন্তু যে সে মজা নয়। সুখে-দুঃখে জড়িয়ে পড়ার মতো এক নিবিড় বন্ধন আষ্টেপৃষ্ঠে। ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলাম রেল ইঞ্জিনের ড্রাইভার কিংবা নীল পোশাক পরা নাবিক। তা শেষ অবধি ধীবরের কাজ করতে করতে হতে হল শব্দের নগণ্য ঠুকঠুক কারিগর। এক নিঃশ্বাসেই পড়ে শেষ করলাম বেলাল চৌধুরীর স্মৃতি বিজড়িত ‘আমার কলকাতা’।
কবি পিয়াস মজিদ-এর সঙ্কলন ও সম্পাদনায় প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত। যারা সেই সময়ের সাহিত্য এবং কলকাতা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য এটি একটি অবশ্য পাঠ্য বই। কলকাতাকে যেন আবার নতুন করে জানলাম। জানলাম শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, কমল কুমার মজুমদার, সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনসহ অরওা অনেকের অজানা অনেক দিক। হায়রে কফি হাউজের আড্ডা! কত জীবনকে কত কিছু দিলে, কত জীবন থেকে কেড়ে নিলে কত কিছু!