কন্যাকুমারির মিলনের কথা

ট্রাভেলগবিডি ডেস্ক

সমুদ্রের উত্তাল নীল জলরাশি, সাগর আর মহাসাগরের মহামিলন, উঁচু উঁচু ঢেউয়ের সমুদ্রতটে আছড়ে পড়া, সমুদ্রের মাঝে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকা বিবেকানন্দ রক ও তামিল কবি তিরুভাল্লুভারের বিশালমূর্তি, মহাসাগরের মাঝে ঢেউয়ের দোলায় ভেসে চলা রঙিন বোট, ঝকঝকে আকাশে সাদা মেঘেদের উড়ে যাওয়া, চারপাশে সবুজের নাচন এগুলোই কন্যাকুমারীর নিত্যকার দৃশ্য। কন্যাকুমারী ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের নাগোড় কৈল জেলার একটি ছোট্ট শহর। এটি দক্ষিণ ভারতের তীর্থ নগরী। মহাসমুদ্রের তীরঘেঁষা এই ছোট্র শহরটি নানা কারণেই বিখ্যাত।

স্বামী বিবেকানন্দ রক ও তামিল কবি তিরুভাল্লুভারের মূর্তি

কন্যকুমারীর অবস্থান ভারতের একেবারে শেষপ্রান্তে যা ভারতের মূল ভূখন্ডেরই শেষপ্রান্ত। ভারতের মানচিত্রের নিচের অংশে যেখানে শ্রীলঙ্কা আছে সেই চোখা ত্রিভুজের শীর্ষ হচ্ছে কন্যাকুমারী। ছোট্ট এই ভুখন্ডে বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর আর ভারত মহাসাগর এক সাথে মিলিত হয়েছে। ফলে জলরাশির এক রুদ্ধশ্বাস রোমাঞ্চ বইতে থাকে এখানে সব সময়। এখানে আছে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম চিন্তাবিদ স্বামী বিবেকানন্দের নামাঙ্কিত ‘বিবেকানন্দ রক’। এই রক বা পাথরে বসে একদিন ধ্যান করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। যার কারণে এই পাথরখণ্ডের নাম করা হয়েছে বিবেকানন্দ রক।

 কন্যাকুমারী থেকে সূর্য়স্তের অনাবিল দৃশ্য

কন্যাকুমারী থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত এক অনাবিল দৃশ্য। সমুদ্রের তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে কুমারী আম্মান মন্দির। কথিত আছে এখানে দেবী পার্বতী আজও কুমারীবেশে শিবের প্রতিক্ষায় আছেন। কুমারী মন্দিরের কাছে রয়েছে গান্ধী মেমোরিয়াল। এখানে গান্ধীজির দেহভস্ম রাখা হয়েছিল।

 যেভাবে যাবেন: 

কন্যাকুমারী যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে বিমানে তামিলনাড়–র ত্রিভুন্নাপুরাম বিমানবন্দরে যাওয়া। সেখান থেকে বাসে বা ট্যাক্সিতে কন্যাকুমারী যাওয়া যায়। এখান থেকে কন্যাকুমারীর দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। তবে যারা ট্রেনে যেতে চান তাদের কলকাতা থেকে ট্রেনে যেতে হবে। কলকাতা থেকে কন্যাকুমারীর দূরত্ব প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার। সপ্তাহে দুটি ট্রেন ছাড়ে কলকাতার হাওড়া স্টেশন থেকে। একটি সোমবার অন্যটি বুধবার। সোমবারে ছাড়ে দ্রুতগতির কন্যাকুমারী এক্সপ্রেস। এটি বিকাল ৪ টা ১০ (আন্তজার্তিক ১৬টা ১০) মিনিটে হাওড়া স্টেশন ত্যাগ করে। ঘন্টায় ৫৬ কিলোমিটার গতিবেগে এটি ৪৩ ঘন্টায় কন্যাকুমারী পৌঁছে। বুধবারে ছাড়ে গুরুদেব এক্সপ্রেস। এটি রাত ১১টা ৫ (আন্তর্জাতিক ২৩টা ০৫) মিনিটে হাওড়া স্টেশন ত্যাগ করে। ঘন্টায় ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে এটি ৪৭ ঘন্টায় কন্যাকুমারী পৌঁছে। এছাড়া চেন্নাইগামী করমান্ডেল এক্সপ্রেস প্রতিদিন হাওড়া স্টেশন ছেড়ে যায়। চেন্নাই থেকেও কন্যাকুমারী যাওয়া যায়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন