অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার পাড়ি

ট্রাভেলগবিডি ডেস্ক

বিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে। বিকল্প হিসেবে চালু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। অনলাইন ক্লাসের জন্য পাহাড় পেরুনোর গল্প, নেটওয়ার্কের জন্য গাছে ওঠার কথা এত দিন শোনা গেছে। এবার অনলাইন ক্লাসের জন্য ১০ কিলোমিটার পথ পেরুনোর কথা জানা গেল। গল্পটি এশিয়া বা আফ্রিাকর কোন তৃতীয় বিশ্বের দেশ নয়। দেশটি ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত। নাম জর্জিয়া। দেশটির ১১ বছর বয়সী শিশু আলেকসান্দ্রে তিসোকলারি প্রতিদিন অনলাইন ক্লাসের জন্য পাড়ি দেয় ১০ কিলোমিটার পথ।

করোনার সংক্রমণের কারণে সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালু করে। নিজ গ্রামে ইন্টারনেটে সংযোগ না পাওয়ায় প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে একটি কুঁড়েঘরে গিয়ে অনলাইনে ক্লাস করছে এই খুদে শিক্ষার্থী। দেশটির এমতিসামবেবি নিউ এজেন্সি নামের একটি গণমাধ্যম আলেকসান্দ্রে তিসোকলারির ক্লাসের যাওয়া নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপিয়েছে।

১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এখানেই অনলাইন ক্লাস করে আলেকসান্দ্রে তিসোকলারিছবি: সংগৃহীত

 

আলেকসান্দ্রে তিসোকলারির বাড়ি আখমেতা এলাকার খেভিসচালা গ্রামে। যেখানে নেটওয়ার্ক মেলে, বাড়ি থেকে সেই ১০ কিলোমিটার দূরের জায়গায় আলেকসান্দ্রে তিসোকলারির বাবা ছোট্ট একটি কুঁড়েঘর বানিয়ে দিয়েছেন। এ পথ পাড়ি দিতে কয়েকটি ছোট নদী পেরুতে হয় আলেকসান্দ্রেকে।

স্থানীয় গণমাধ্যমকে আলেকসান্দ্রে জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে আমার স্কুল শুরু হয়। আগে দিনে দুই ঘণ্টা ক্লাস হতো। এখন ক্লাসের সময় বেড়েছে। বাবা আমাকে ক্লাস করার জন্য ১০ কিলোমিটার দূরে ছোট কুঁড়েঘর করে দিয়েছেন। বাড়ি থেকে কুঁড়েঘরে পৌঁছাতে কয়েকটা ছোট ছোট নদী পার হতে হয় তাকে।

১১ বছরের খুদে শিক্ষার্থী জানায়, ‘প্রথমে কুঁড়েঘরে ছোট দরজা ছিল, পরে সেটিকে সরিয়ে ফেলা হয়। কারণ, ইন্টারনেটের সিগন্যাল পেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল দরজাটি। কয়েক দিন আগে আমার কম্পিউটারটিও নষ্ট হয়ে যায়। এখন অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার একমাত্র ভরসা মোবাইল। মোবাইল ব্যবহার করেও ক্লাসে যোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে মাঝেমধ্যে।’

আলেকসান্দ্রের মা জানান, তিনি কয়েকবার তাঁর ছেলেকে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তির চেষ্টা করেছিলেন, তবে মূল প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে তার পরিবারের কারও নিজস্ব গাড়ি নেই। বাড়ির আশপাশে স্কুল নেই। জর্জিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তিনি পরিবহন সমস্যার কথা উল্লেখ করে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো এ সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

 

 

 

 

 

সূত্র-এমতিসামবেবি ও প্রথম আলো

 

 

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন